সংযুক্ত আরব আমিরাতে হামলা করতে আসা তিনটি ড্রোন ধ্বংস করার দাবি করেছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। বুধবার রাতে মন্ত্রণালয়ের এক টুইট বার্তায় ড্রোন ধ্বংসের এই দাবি করা হয়।
টুইট বার্তায় বলা হয়, ‘প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আজ (বুধবার) ভোরে হামলার উদ্দেশ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আকাশসীমায় প্রবেশ করা তিনটি ড্রোন জনবসতির বাইরে বাধা দেয়া ও ধ্বংস করার ঘোষণা করছে।’
এতে আরো বলা হয়, ‘প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যেকোনো হুমকি মোকাবেলায় এবং রাষ্ট্র ও এর ভূখণ্ডকে সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণে প্রস্তুত রয়েছে।’
তবে এই ড্রোনগুলো কোথা থেকে পাঠানো হয়েছিলো তা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়নি।
এর আগে আরো তিন দফা সংযুক্ত আরব আমিরাতের ওপর হামলা করা হয়। গত ১৭ জানুয়ারি, ২৪ জানুয়ারি ও ৩১ জানুয়ারি তিন দফায় আমিরাতের ওপর হামলা চালায় ইয়েমেনে ইরান সমর্থিত হাউছি বিদ্রোহীরা।
ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধে উত্তরাঞ্চলীয় হাউছি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বের জোটে সংযুক্ত আরব আমিরাতের অবস্থান দেশটিকে হাউছিদের আক্রমণের লক্ষ্যে পরিণত করেছে।
২০১১ সালে আরব বসন্তের পরিপ্রেক্ষিতে জনগণের বিক্ষোভের জেরে ইয়েমেনে দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক আলী আবদুল্লাহ সালেহ সরকারের পতন ঘটে। নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদ রাব্বু মানসুর হাদি দায়িত্ব নেন। নতুন সরকার গঠন হলেও ইয়েমেনের বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব অব্যাহত থাকে।
বিবাদমান পক্ষগুলোর দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৪ সালের শেষে ইরান সমর্থিত উত্তর ইয়েমেনের হাউছি বিদ্রোহীরা রাজধানী সানা দখল করলে প্রেসিডেন্ট হাদি সৌদি আরবে আশ্রয় নেন। ২০১৫ সালের মার্চে সৌদি নেতৃত্বের জোট হাউছিদের বিরুদ্ধে ইয়েমেনে আগ্রাসন করলে দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধের মুখে পড়ে আরব উপদ্বীপের দরিদ্রতম দেশটি।
ছয় বছরের বেশি সময় চলমান এই গৃহযুদ্ধে হাউছি নিয়ন্ত্রিত সানাকেন্দ্রীক উত্তর ইয়েমেন ও বন্দর নগরী এডেনকেন্দ্রীক দক্ষিণাঞ্চলীয় সরকারের অধীন দক্ষিণ ইয়েমেনে বিভক্ত হয়ে পড়ে।
ইয়েমেনে চলমান যুদ্ধ–সংঘাতে এক লাখের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের বেশিরভাগই বেসামরিক লোকজন। এছাড়া যুদ্ধে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখো মানুষ।
ছয় বছরের টানা যুদ্ধ ও অবরোধে দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে ইয়েমেন। ইতোমধ্যে ক্ষুধায় ৫০ হাজারের বেশি লোকের মৃত্যু হয়েছে দেশটিতে। ইয়েমেনের চলমান পরিস্থিতিকে বিশ্বের নিকৃষ্টতম মানবসৃষ্ট মানবিক সংকট হিসেবে হিসেবে বর্ণনা করেছে জাতিসঙ্ঘ।