সর্বশেষ সংবাদ
Home / আন্তর্জাতিক / সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে ১৭ রোহিঙ্গার মৃত্যু

সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে ১৭ রোহিঙ্গার মৃত্যু

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বহনকারী একটি নৌকাডুবে চলতি সপ্তাহে অন্তত ১৭ জনের মৃত্যু ঘটেছে। উদ্ধারকারীদের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

প্রতি বছর হাজার হাজার রোহিঙ্গা মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় পাড়ি দেওয়ার উদ্দেশে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের শিবির থেকে বিপজ্জনক সমুদ্র যাত্রা করে। এই পথে তারা জীবনের ঝুঁকি নেয়। বেশিরভাগ সময় দুর্বল এবং ছোট নৌকায় করে তারা এই সমুদ্র পথ পাড়ি দিতে চেষ্টা করে যার কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

মিয়ানমারের সিত্তয়ে শহরের শ্বে ইয়াং মেটা ফাউন্ডেশনের একজন উদ্ধারকারী বায়ার লা এএফপিকে বলেছেন, রবিবার রাতে উত্তাল সাগর পাড়ি দিয়ে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করা নৌকাটিতে ৫০ জনের বেশি লোক ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। আমরা গতকাল (বুধবার) পর্যন্ত ১৭টি মৃতদেহ এবং আটজনকে জীবিত পেয়েছি। পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে গেছে।’

উদ্ধারকারীরা এখনও তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। যদিও বোর্ডে সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি। বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে প্রায় ৬ লাখ রোহিঙ্গা মুসলমান রয়েছে। তাদেরকে বাংলাদেশ থেকে অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং তারা নাগরিকত্ব ও চলাচলের স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার জানুয়ারি মাসের তথ্য অনুযায়ী, ৩৯টি জাহাজে করে ৩৫০০ এর বেশি রোহিঙ্গা ২০২২ সালে আন্দামান সাগর এবং বঙ্গোপসাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। এর আগের বছর এই সংখ্যা ছিল মাত্র ৭০০। সংস্থাটি বলেছে, অন্তত ৩৪৮ জন রোহিঙ্গা গত বছর সমুদ্রে মারা গেছে বা নিখোঁজ হয়েছে। এই সংখ্যা কমানোর জন্য আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার বলেছে, এই অঞ্চলের সামুদ্রিক কর্তৃপক্ষকে ‘দুর্দশাগ্রস্ত লোকদের উদ্ধার ও নামানোর জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে এবং অনেকগুলো নৌকা সপ্তাহ ধরে পাড়ি দিয়ে চলে গেছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রাকে ‘বর্ণবাদের’ সঙ্গে তুলনা করেছে।

২০১৭ সালে মিয়ানমারের সামরিক দমন অভিযানে হত্যা, অগ্নিসংযোগ এবং ধর্ষণের ব্যাপক ঘটনার পর প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা বাধ্য হয়ে রাখাইন ছেড়ে বাংলাদেশে চলে আসে। গণহত্যার পর মিয়ানমার জাতিসংঘের শীর্ষ আদালতে গণহত্যার অভিযোগের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্বদেশে প্রত্যাবাসন শুরু করতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার আলোচনাও করেছে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন শীর্ষ অধিকার দূত জুলাই মাসে বলেছিলেন, জাতিগত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনের জন্য পরিস্থিতি অনিরাপদ। অর্থ বরাদ্দের কারণে জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থাকে এ বছর দুইবার বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে রেশন কমাতে হয়েছে।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ যেভাবে পরিচালিত হয়

  স্টাফ রিপোর্টার: ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর ব্যর্থতার পরিচয় দেয়। সেই গোয়েন্দা ...