বিনোদন ডেস্ক: পাকিস্তানের দুই খ্যাতিমান সঙ্গীতশিল্পী রাহাত ফতেহ আলী খান ও আতিফ আসলাম। রাহাত ফতেহ আলীকে পাকিস্তানি কাওয়ালি গানের জীবন্ত কিংবদন্তী মনে করা হয়। অন্যদিকে, আতিফ আসলাম শুধু পাকিস্তানেরই নন, তিনি ভারতের নতুন প্রজন্মেরও ক্রেস্ট। এই দুই শিল্পী নিজ দেশের পাশাপাশি বলিউডের ছবিতেও নিয়মিত গান করেন।
কিন্তু দুই শিল্পীতেই ঘোর আপত্তি বাবুল সুপ্রিয়র। যিনি নিজেও ভারতের একজন নামকরা গায়ক। বিজেপি থেকে নির্বাচন করে তিনি আবার মোদী সরকারের মন্ত্রীও হয়েছেন। দুই পাকিস্তানি শিল্পী রাহাত ফতেহ আলী খান ও আতিফ আসলাম বলিউডের ছবিতে প্লেব্যাক করুক, এটা তিনি চান না।
করণ জোহার, সোনাক্ষী সিনহা, বোমান ইরানি অভিনীত ‘ওয়েলকাম টু নিউইয়র্ক’ ছবিতে রাহাত ফতেহ আলী খানের ‘ইস্তেহার’ শিরোনামে একটি গান রয়েছে। ছবি থেকে এই গানটি মুছে ফেলার জন্য সম্প্রতি দাবি জানিয়েছেন ভারতের এই গায়ক-মন্ত্রী। রাহাতের পাশাপাশি আতিফ আসলামের ভারতে গান গাওয়ার ব্যাপারেও তার তীব্র আপত্তি রয়েছে।
তিনি ক্ষোভের সুরে বলেন, ‘আমি ছবি নির্মাতাদের কাছে অনুরোধ করব, যেন রাহাতের কণ্ঠ সরিয়ে ‘ইস্তেহার’ গানটিতে অন্য কারও কণ্ঠ আনা হয়। আমি এটাও বুঝি না ‘দিল গিয়া গলান’ গানটি কেন আতিফ আসলাম গাইবে। যেখানে এই একই গান অনেক ভালো গাইতে পারবেন আমাদের অরিজিৎ সিং। এফএম স্টেশনে যখন গর্বের সঙ্গে এই গান বাজবে, তখনই খবরের চ্যানেলগুলিতে পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসে আমাদের জওয়ানদের শহিদ হওয়ার খবর দেখাবে।’
আতিফ বা রাহাতকে ছাড়া ভারতের কোনো সমস্যা হবে না বলে দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও গায়ক বাবুল সুপ্রিয়। তিনি বলেন, ‘দিল দিয়া গলান’ গানটি দারুণ গেয়েছে আতিফ। রাহাতও খুব ভালো গায়ক। তবে তাদের গান নিয়ে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। সমস্যা তাদের জাতীয়তা নিয়ে। এটা কোনো রাজনৈতিক অবস্থান নয়। যে পরিবারগুলো ছেলে, ভাই বা স্বামীকে হারিয়েছে, তাদের আবেগের পাশে আমাদের অবশ্যই দাঁড়াতে হবে।’
বলিউডের জাতীয় দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দিয়ে বাবুলের যুক্তি, ‘ভারতীয়ত্বের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলিউড। সারা বিশ্বে এটি ভারতের প্রতিনিধিত্ব করে। ভারতীয় ছবিতে পাকিস্তানি শিল্পীদের নিষিদ্ধ করলে বিশ্বজুড়ে পাক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তোলা যাবে। রাহাত ও আতিফের একটাই অপরাধ, তারা পাকিস্তানি। সে জন্যই তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।’
এর আগে প্রতিবাদ উঠেছিল পাকিস্তানি নায়ক ফাওয়াদ খানকে নিয়েও। প্রতিবাদের মুখে শেষ পর্যন্ত ভারতীয় ছবিতে ফাওয়াদকে নিষিদ্ধ করা হয়। একই ভাবে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন আরেক পাক অভিনয়শিল্পী মাহিরা খানও। বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানের সঙ্গে ‘রইস’ ছবিতেই শুধু অভিনয় করেছেন তিনি। এবার রাহাত ও আতিফের ভাগ্যে কী আছে সেটা দেখার জন্যই অপেক্ষা।