রাজশাহী জেলার তানোর উপজেলায় চলতি মৌসুমে আলুর ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এ উপজেলার ২টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নে চাষযোগ্য জমিতে এখন শুধু দিগন্তজুড়ে আলু গাছের সবুজ রঙের সমারোহ। পোকার আক্রমণে এ উপজেলায় রোপা আমন ধানের কিছুটা ক্ষতি হলেও তা পুষিয়ে নিতে কৃষক আলু চাষে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। মাঠে স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শে সঠিক সময়ে আলু গাছের পরিচর্যা করছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি শস্য মৌসুমে উপজেলায় ২ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে কৃষকরা আলু চাষ করেছে। আলু লাগানোর শুরুতে বৃষ্টির কারণে বীজ কিছুটা পচন দেখা দিলে উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ প্রত্যন্ত অঞ্চলের মাঠে গিয়ে কৃষকদের সঠিক সময়ে পরামর্শ দেয়া এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় অন্যান্য শস্যের পাশাপাশি আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
তানোর উপজেলা কৃষ্ণপুর গ্রামের আদর্শ আলু চাষি আলহাজ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এবার ১শ’ ১০বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের আলুর বীজ লাগিয়েছি। আলুর গাছও সুন্দর হয়েছে। আশা করছি এবছর আলু’র দাম ভালো পাওয়া যাবে।
সময়মতো আলু ঘরে তুলতে পারলে এবং চাহিদা ও বাজারমূল্য ভালো থাকলে আলুচাষে কৃষকের আগ্রহ আরো বৃদ্ধি পাবে বলে স্থানীয় কৃষক ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মনে করছেন। তবে তানোর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মধ্যে তানোর, ধানতৈড়, গোকুল, তালন্দ, আড়াদিঘী, কালনা, মাদারীপুর, কালীগঞ্জ, পাঁচন্দর, মুণ্ডুমালা, চাঁন্দুড়িয়া ও সরনজাই এলাকায় সবচেয়ে বেশি আলু চাষ হয়েছে বলে কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে।
সিন্দুকাই গ্রামের প্রান্তিক কৃষক আশিকুল ইসলাম আশিক জানান, আমি এ বছর ১৬০ শতক জমিতে ভালো ডায়মন্ড জাতের আলু লাগিয়েছি। এ পর্যন্ত আলু গাছের গঠন দেখে মনে হচ্ছে বাকি দিনগুলোতে যদি আবহাওয়া ভাল থাকে আশানুরূপ ফলন পাবো।
এ নিয়ে তানোর উপজেলা কৃষি অফিসার শফিকুল ইসলাম জানান, তানোর উপজেলায় এ বছর আবহাওয়াজনিত কারণে আলুর তেমন একটা বড় ধরণের ক্ষতি হয়নি। প্রথম দিকে লাগাতার কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে সমস্যা দেখা দিলেও আমরা কৃষকদের সাথে কথা বলে তাদের যুগোপযোগী পরামর্শ দিয়ে তা সমাধান করেছি। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়াও কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের নিবিড়ভাবে যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্চার বিষয়ে দিক-নির্দেশনা দেয়া অব্যাহত রয়েছে।