না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ‘ইত্যাদি’ খ্যাত গায়ক আকবর। রোববার বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। খবরটি নিশ্চিত করেছেন গায়কের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা।
এ সময় তিনি বলেন, ‘মানুষটাকে ধরে রাখতে পারলাম না। আজ একেবারে চলেই গেল। সবাই দোয়া করবেন ওর জন্য।’ এছাড়াও ‘সিঙ্গার আকবর’ ফেসবুক আইডি থেকে আকবর কন্যা লেখেন, ‘আব্বু আর নেই’।
দীর্ঘদিন ধরেই ডায়াবেটিস, জন্ডিস, কিডনি, রক্তের প্রদাহসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত ছিলেন আকবর। দুই কিডনি নষ্ট হওয়ার কারণে তার শরীরে পানি জমে যায়, সে কারণে ডান পা নষ্ট হয়ে পড়ে। কিছু দিন আগে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সেই পা কেটে ফেলা হয়। এরপর কিডনি ও লিভারের সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করে।
গত ৯ নভেম্বর থেকে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। কিন্তু তাতে আশানুরূপ ফল আসেনি। এজন্য তাকে ভারতে নিয়ে যাওয়ার কথাও ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত না ফেরার দেশে উড়াল দিলেন ‘হাত পাখার বাতাসে’ খ্যাত এই শিল্পী।
গত সপ্তাহে আকবরের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা বলেছিলেন, ‘আকবরের চিকিত্সার কোনো উন্নতি হয়নি। প্রস্রাব আর পায়খানার রাস্তা দিয়ে রক্ত যাচ্ছে। ডাক্তার জানিয়েছেন রক্ত যাওয়া বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। ডাক্তার আরও জানিয়েছেন এ অবস্থা থেকে ফেরার চান্স খুব কমই থাকে। তারপরও প্রস্রাব আর পায়খানার রাস্তা দিয়ে রক্ত যাওয়া বন্ধ হলে তারা হয়তো আমাদের কিছুটা আশা দিতে পারতেন।’
আকবরের স্মৃতিচারণ করে যা বললেন পূর্ণিমাআকবরের স্মৃতিচারণ করে যা বললেন পূর্ণিমা
এর আগে কয়েক দফা ভারতে চিকিত্সা হয় তার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিকিত্সায় ২০ লাখ টাকা দেন। চিকিত্সায় সাহায্য করেন ইত্যাদির উপস্থাপক হানিফ সংকেত। বেশ কয়েকবার অভিনেতা ডিপজলও তার চিকিত্সা সহায়তায় এগিয়ে আসেন।
উল্লেখ্য, এক সময় যশোরে রিকশা চালাতেন আকবর। তবে গানের গলা ছিল সুরেলা। সেই সুরে তিনি স্থানীয় অনেককেই মুগ্ধ করেছিলেন। এরপর হানিফ সংকেতের ‘ইত্যাদি’তে এসে ব্যাপকভাবে পরিচিতি পান। পরবর্তীতে নিজের মৌলিক গানেও পান সাফল্য। তার গাওয়া ‘তোমার হাতপাখার বাতাসে’ গানটি সারাদেশের মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে গিয়েছিল। এছাড়া তার কণ্ঠে ‘একদিন পাখি উড়ে যাবে যে আকাশে, ফিরবে না সেতো আর কারও আকাশে’—কিশোর কুমারের গানটিও বেশ জনপ্রিয়তা পায়।