সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।
তিনি বলেছেন, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে সম্পূর্ণ বে-আইনিভাবে জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সব আইনজীবীর জন্য এটা লজ্জার ব্যাপার। আমরা অবিলম্বে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের জামিন বাতিলকারী ম্যাজিস্ট্রেট তফাজ্জল হোসেনের বিচারিক ক্ষমতা প্রত্যাহার এবং তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি।
পরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বরাবরে একটি স্মারকলিপি দেন সমিতির নেতারা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মাহবুব উদ্দিন খোকন এ দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, জগলুল হায়দার আফ্রিক, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল প্রমুখ।
এতে লিখিত বক্তব্যে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে জামিনযোগ্য মামলায় জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি এবং অবিলম্বে তার মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।
খোকন বলেন, তিনি (ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন) আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। জামিনযোগ্য মামলায় তাকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। যা খুবই দুঃখজনক। আমরা মনে করি, ফরমায়েশি আদেশের কারণে এটি করা হয়েছে।
গত ৩ সেপ্টেম্বর মানহানির মামলায় মইনুল হোসেনের জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত এ আদেশ দেন। এর আগে মইনুল হোসেন ঢাকার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন।
এরও আগে এই মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন মইনুল হোসেন। হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী জামিননামা বিচারিক আদালতে জমা দেয়া হয়। নিয়মিত তিনি হাজিরা দিয়ে আসছিলেন। আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুসারে মইনুল হোসেন আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন।
শুনানির সময় আদালতকে তিনি বলেন, আসামি বয়স্ক, অসুস্থ মানুষ। যে অভিযোগে মামলা তা জামিনযোগ্য। তবে আদালত শুনানি নিয়ে মইনুল হোসেনের জামিনের আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে গত বছরের ২১ অক্টোবর মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে মানহানির মামলা করেন সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি। দণ্ডবিধির ৫০০, ৫০৬ ও ৫০৯ ধারায় মইনুলের বিরুদ্ধে মামলা করেন মাসুদা ভাট্টি। আদালত মাসুদা ভাট্টির মামলাটি আমলে নিয়ে মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
গত বছরের ১৬ অক্টোবর একাত্তর টেলিভিশনের টকশোতে আলোচকদের একজন ছিলেন মাসুদা ভাট্টি। একপর্যায়ে লাইভে যুক্ত হন আইনজীবী মইনুল হোসেন। এ সময় মইনুলের কাছে মাসুদা ভাট্টির প্রশ্ন ছিল, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি আলোচনা চলছে, আপনি সদ্য গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে এসে জামায়াতের প্রতিনিধিত্ব করছেন কিনা?’ মইনুল হোসেন এ প্রশ্নের জবাব দেয়ার একপর্যায়ে মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলে মন্তব্য করেন।