স্টাফ রিপোর্টার: মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার ফুলদী নদীতে উপজেলা প্রশাসন ভবন থেকে কয়েশগজ দূরে রসুলপুর খেয়াঘাট অবস্থিত। ফুলদী নদী পার হয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার ও মানুষকে উপজেলা প্রশাসন,কলেজ,থানা, সাব রেজিষ্টি অফিসসহ প্রয়োজনীয় স্থানে যাতায়াত করতে হয়।
ঢাকা-চট্রগ্রাম হাইওয়েতে আসতে হলেও এই নদী পার হতে হয়। বর্তমানে ফুলদী নদীর দুই পাশের এলাকায় পিচ ঢালা রাস্তা হওয়ায় প্রচুর সংখ্যক যানবাহন চলে। বিশেষভাবে বর্তমানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রাইভেট কার,পিক আপ ভ্যান,ট্রাক,মটর সাইকেল সিইএনজি এবং অটো মিশুক চলাচল করে।
বর্তমান সরকারের সময় গজারিয়া-ভবেরচর রাস্তা প্রশস্থ এবং সংস্কার হওয়ায় প্রায় ২৪ ঘন্টাই এপার-ওপার ব্যক্তিগত,পারিবারিক এবং ব্যবসায়িক কারনে যানবাহন এবং মানুষ যাতায়াত করে। গুরুত্ব বিবেচনায় বাস্তবিক কারনেই ফুলদী নদীতে ফেরী দেয়া হয়েছে। কিন্তু ফেরি ব্যবস্থাপনার অনিয়মের কারনে জনগন ফেরির সুবিধা ভোগ করতে পারছে না বরং হয়রানির শিকার হচ্ছে।
যানবহন আসলেও ফেরির লোকজন ইচ্ছা করেই বিলম্ব করে ফেরি ছাড়ে যাতে সাধারণ লোকজন ফেরিতে যাওয়ার ধৈয্য হারিয়ে অতি নিকটেই গুদারা ঘাটের ট্রলার দিয়ে নদী পার। বয়স্ক লোক সহ নারী-পুরুষ অনেকেই ট্রলারের চেয়ে ফেরিতে নদী পার হতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। বর্ষা মৌসুমে ট্রলারে নদী পার হতে গিয়ে অনেক সময় দূর্ঘটনা ঘটার উদাহরণ ও আছে।
লোকজনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে যেয়ে দেখা যায় ফেরির ড্রাইভার ফেরিতে উঠা সাধারণ লোকজনদের সাথে তর্ক করছেন, সাধারন লোকজনদেরকে ফেরিতে উঠে অপেক্ষা না করে ট্রলারে নদী পার হওয়ার জন্য উৎসাহিত করছেন।
স্থানীয় একজন তাড়াতাড়ি ফেরি ছাড়তে বললে সামসু নামে ফেরির ড্রাইভার বয়স্ক লোকটির সাথে অশ্লিল ভাষায় ধমকের স্বরে কথা বলেন। ফেরিতে থাকা ৩০-৪০ জন লোকের মধ্যে বেশ কয়েকজন সাধারণ লোকজন বলেন তারা ফেরিতে নদী পার হতে অত্যন্ত আনন্দ ও গর্ব বোধ করেন।,তাছাড়া ফেরী করে নদী পার হতে তারা নিরাপদ মনে করেন।
সরকার জনগনের জন্য ফেরীর ব্যবস্থা করেছেন অথচ ফেরীর লোকজন খেয়াঘাটের লোকজনের সাথে আতাঁত করে সাধারণ জনগনকে পার করতে অনিহা প্রকাশ করে,দুর্ব্যবহার করে। অথচ ফেরির জন্য প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ টাকার তেল-ডিজেল খরচ দেখানো হয়। সহজ সরল প্রান্তিক শ্রেনির সাধারন জনগন ফেরির লোকদের খারাপ আচরণ সহ্য করলেও সচেতন লোকজনের সাথে প্রায়শই ফেরীর লোকজনের বাক বিতন্ডা হয়।
সাধারন জনগনের দাবী সকল ধরনের যানবাহনের জন্য ফেরি পাড়াপাড়ের জন্য নির্ধারিত হারে টোল এবং প্রয়োজনে জনগনের জন্য নূন্যতম ভাড়া নির্ধারণ করা হউক। ফেরির যাত্রী স্থানীয় অনিক নামক একজন কলেজ ছাত্র বলেন আমাদের প্রতিদিন কলেজে আসতে-যেতে শুধু নদী পাড় হওয়ার জন্যই ১০ টাকা ব্যয় করতে হয়।
ফেরী সময়মতো নিয়মিত চললে আমাদের এই যাতায়াত খরচ থেকে বাঁচতে পারতাম। সচেতন জনগন মনে করেন ফেরি চলাচলের ব্যবস্থা করলে জনগনের লক্ষ লক্ষ টাকা বেঁচে যেতো,ফেরী ভাড়া বাবদ সরকারের মোটা অংকের টাকা উপার্জন হতো,খেয়া পারাপারের ভোগান্তি থেকে জনগন রক্ষা পেতো এবং গজারিয়ার যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হতো।
উল্লেখ্য জেলা সদর মুন্সিগঞ্জের সাথে গজারিয়ার যোগাযোগ সহজ করার জন্য কাজিপুরায় মেঘনা নদীতে ফেরী চালু করা হয়েছে। এমতাবস্থায় ফুলদী নদীর উপড় একটি ব্রিজ নির্মানের জন্য এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে দাবী করে আসছেন। ব্রিজ না হওয়া পর্যন্ত ফুলদী নদীতে জনগন এবং সব ধরনের স্থলযানবহন পারাপারের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার জন্য জনগন দাবী করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোন পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করেন নি।
তাছাড়াও ফুলদী নদী পার হতে ৫ টাকাকে অনেক বেশি বলে অভিযোগ করেন। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় ফেরির ড্রাইভার বেতন পেয়ে থাকেন, ফেরির খরচাদি বহন করা হয়ে থাকে অথচ জনগণ নিজেদের বৃহত্তর স্বার্থে ফেরি পার হতে পারবে না কেন? ফেরি ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের সাথে ফোনে যোগাযোগের চেস্টা করেও যোগাযোগ করা যায় নি।
সরকারের গৃহিত উন্নয়নের সুফল জনগণের দ্বার গোড়ায় পৌছে দেয়ার লক্ষ্যে স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের দৃষ্ঠি আকর্ষন করছি।