কৃষি ডেস্ক: ধানের বিভিন্ন রোগের মধ্যে অন্যতম হলো খোলপোড়া রোগ। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা এবং সচেতন চাষাবাদের মাধ্যমে এ রোগ থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
রোগটি কেন হয়, দেখতে কেমন : খোলপোড়া ছত্রাকজনিত রোগ। ধানগাছের কুঁশি স্তর থেকে এ রোগের বিস্তার শুরু হয়। প্রথম অবস্খায় পাতার খোলে গোলাকার ও লম্বাটে পানি ভেজা ধূসর রঙের ছাপ পড়ে। ধীরে ধীরে এই ছাপ বড় আকারে ওপরের দিকে সম্পূর্ণ খোলে ও খোলসংলগ্ন পাতায় ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্ত খোল দেখতে অনেকটা গোখরো সাপের চামড়ার দাগের মতো দেখায়। উষä ও আর্দ্র আবহাওয়ায় রোগের বিস্তার বেশি হয়। এ ছাড়া ক্ষেতে বেশি মাত্রায় ইউরিয়া ব্যবহার এ রোগের বিস্তারে সহায়তা করে। ঘন করে চারা রোপণ করা ক্ষেতে এ রোগ বেশি হয়। আমাদের দেশে আমন ও আউশ মৌসুমে খোলপোড়া রোগের সমস্যা বেশি দেখা যায়।
চিকিৎসা : এ রোগ নিয়ন্ত্রণে ক্ষেতের পানি শুকিয়ে ২-১ দিন রেখে আবার সেচ দিতে হয়। এভাবে ক্ষেতে রোগের সংক্রমণ না কমা এবং আবহাওয়া অনুকূলে না আসা পর্যন্ত পানি বের করে দেয়া ও সেচ দেয়ার কাজটি করতে হয়। খোলপোড়া রোগ দেখা দেয়ার পর বিঘাপ্রতি পাঁচ কেজি এমওপি সার সমান দুই ভাগে ভাগ করে উপরি প্রয়োগ করতে হয়। প্রথম ভাগ রোগ দেখা দেয়ার সাথে সাথে এবং দ্বিতীয় ভাগ প্রথম উপরি প্রয়োগের ১৪ থেকে ১৫ দিন পর প্রয়োগ করতে হয়। রোগের প্রাথমিক অবস্খায় হেক্সাকোনাজল বা প্রপিকোনাজল বা টেবুকোনাজল-জাতীয় ছত্রাকনাশক দুই গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হয়।
অন্য ব্যবস্খা : রোগ প্রতিরোধে আগেই কিছু ব্যবস্খা নিলে এ রোগের সংক্রমণ অনেকাংশে কমানো যায়। যেমন- নির্দিষ্ট রোপণ দূরত্বে চারা রোপণ করা (সারি থেকে সারি ২৫ সেন্টিমিটার ও গাছ থেকে গাছ ১৫ সেন্টিমিটার অথবা সারি থেকে সারি ২৫ সেন্টিমিটার ও গাছ থেকে গাছ ২০ সেন্টিমিটার), জমিতে সুষম মাত্রায় সার ব্যবহার করা। যেসব এলাকায় এ রোগ প্রায় প্রতি বছরই দেখা দেয় সেসব এলাকায় খাটো জাতের গাছের পরিবর্তে মোটামুটি লম্বা জাতের চাষ করা। রোগাক্রান্ত জমির ধান কাটার পরপরই নাড়া পুড়িয়ে দেয়া এবং শস্যপর্যায় চালু করা।
লেখক: লেখক: খোন্দকার মো: মেসবাহুল ইসলাম, কৃষিবিদ