দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা হওয়ায় দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বিএনপির নেতৃত্ব যাওয়ার কথা সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে। তবে তিনিও দুর্নীতির দুটি মামলায় দণ্ডিত। আবার তিনি দেশের বাইরে। এই অবস্থায় দল কীভাবে চলবে তা নিয়ে নানা জল্পনা কল্পনা চলছে।
আবার খালেদা জিয়ার সাজা হলে দল ভাঙার ষড়যন্ত্র হতে পারে এমন শঙ্কাও ছিল বিএনপিতে। তবে বিএনপি আশায় আছে, রায়ের বিরুদ্ধে আপিল হলে দ্রুত জামিন পেয়ে যাবেন।
আবার বিএনপি এই সময়ের মধ্যে কীভাবে চলবে, সেই নির্দেশনা খালেদা জিয়া আগেভাগেই বলে গিয়েছেন বলে নেতারা জানিয়েছেন। ফলে আগামী কয়েকদিন নিয়ে তেমন কোনো ভাবনা নেই বিএনপিতে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচবছর ও তারেক রহমানসহ বাকি পাঁচ আসামির ১০ বছর করে সাজা ও অর্থদণ্ড করেছেন আদালত। বর্তমানে খালেদা জিয়াকে রাখা হয়েছে পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে।
বকশিবাজারের আদালত থেকে বের হওয়ার পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা ও পরামর্শে দল চলবে। তিনি দলের দ্বিতীয় ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি।’
তিনি তো দেশের বাইরে-এমন মন্তব্যের জবাবে নজরুল বলেন, ‘এ জন্য তাঁর দেশে ফেরার দরকার নেই। ওখান থেকেই নির্দেশনা দিতে পারবেন ‘
তারেক কবে আসবেন?
নজরুল বললেন, ‘আপনারা জানেন তারেক রহমান অসুস্থ। তিনি সুস্থ হলে দেশে আসবেন।’
বকশিবাজারে খালেদা জিয়ার রায় হওয়ার পর বের হওয়ার সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজউদ্দীন আহমেদের সঙ্গে সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা হয়। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘দলের সেকেন্ড পারসন হিসেবে তারেক রহমানের পরামর্শে দলের স্থায়ী কমিটি দল পরিচালনা করবেন। কোনো সমস্যা হবে না। আর চেয়ারপারসন তো ইতিমধ্যে নির্দেশনা দিয়েই গেছেন। সুতরাং কোনো সমস্যা হবে না।’
খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন,‘দল দলের মতো চলবে। চেয়ারপারসন অন্তরীণ হয়েছেন বলে দল চলবে না এমনটা ভাবার কারণ নেই। আর তিনি তো মুক্তি পাবেন। আমরা আইনি লড়াই শুরু করব। এই সময়ে কী করতে হবে কীভাবে দল চলবে সে কথা তো ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) বলে গেছেন।’
আগামী রবিবার উচ্চ আদালতে খালেদা জিয়ার জামিন ও রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করতে চায় বিএনপি। নেতারা আশা করছেন অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি মুক্তি পাবেন।
বিএনপির গঠনতন্ত্রের ৫ (গ) ধারায় সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানকে দ্বিতীয় ক্ষমতাবান ব্যক্তির মর্যাদা দিয়েছে। চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতিতে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান স্থায়ী কমিটি, নির্বাহী কমিটির সভা ডাকাসহ চেয়ারপারসনের অন্য সব ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দল পরিচালনায় এই দুজন ছাড়া অন্যদের কোনো ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। কেননা এ দুজনের বাইরে কেউই দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামের বৈঠক ডাকতে পারেন না। আর এ বৈঠক না হলে কোনো সিদ্ধান্ত অনুমোদন পায় না।
আর সামনে থেকে নেতৃত্ব দিবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্যদের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবেন।
স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন,‘দল পরিচালনা নিয়ে দুশ্চিতার কিছু নেই। আমাদের সেই পরিকল্পনা করা আছে। দল পরিচালনার ক্ষেত্রে আশা করি সমস্যা হবে না আমাদের’