ব্রাক্ষণবাড়িয়া প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মালিকানাধীন পৌর আধুনিক সুপার মার্কেট এর ৩য় তলায় অবস্থিত প্যানাসিয়া গ্র্যান্ড হসপিটালটি যাত্রা শুরুর পর থেকেই দখলবাজদের কোপানলে পড়েছে। নানা ছলচাতুরি করেও যখন হাসপাতালটি দখলকরা যাচ্ছিল না তখন সেই ভূমি দস্যু সিন্ডিকেট এবার প্রকাশ্যে এসে হাসপাতালটি ধ্বংস করে তাদের মনোবাসনা পূরণ করেছে। গত ২১ তারিখ রাত ৯ টায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তালা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে সমস্ত যন্ত্রপাতি আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে যায়। যদিও হাসপাতাল দখল হতে পারে মর্মে বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ১৪৪ ধারা জারি করেছিল। ১৪৪ ধারা জারির পরও কিভাবে শহরের প্রাণকেন্দ্রে হাসপাতালটি দখল হলো এবং এর ভিতরে থাকা আড়াই কোটি টাকার মালামাল লুট হলো তা কারো কাছে বোধগম্য নয়। পুলিশের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকার জন্যই এমনটা হয়েছে বলে সবাই মনে করছে। বিশেষ করে বর্তমান ওসির নির্লিপ্ততা ও দখলবাজদের সাথে সখ্যতা এর কারণ বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল। মামলা আদালতে চলমান থাকার পরও ওসি মো: নবীর হোসেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কে মালিকানার বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসতে চাপ দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। প্রায় ৫০ জন ক্ষুদে বিনিয়োগকারী তাদের সর্বস্ব হারিয়ে এখন পথে বসেছে। যে কোন প্রতিষ্ঠান হিসাবের স্বচ্ছতা না থাকলে সেটি এমনিতেই দুর্বল হয়ে পড়ে। প্রতিষ্ঠানটি যখন নির্মাণ করা হয় তখন এর হিসাবের দায়িত্ব ছিল জিয়াউল হক জিয়ার কাছে। নির্মাণ কাজের হিসাব তিনি জমা দেন ৩ কোটি ৭ লক্ষ টাকা যা সম্পূর্ণ চাতুরীপূর্ণ। হিসাবটি অডিট করলে তা ধরা পড়ে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স এর সভাপতি, প্রেস ক্লাব সভাপতি ও সেক্রেটারি সহ ৬ সদস্যের জুরি বোর্ড বিষয়টির সামাজিক সমঝোতা করে জিয়াকে ১ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দেয়। জিয়ার বড় ভাই এরশাদও সেই সময় রায়টি মেনে আসেন। তারপর থেকে জিয়া টাকা ফেরত না দিতে নানা টালবাহানা শুরু করে ও তার সাথে এলাকার চিহ্নিত ভূমি দস্যুদের যোগসাজশ বাড়তে থাকে। এরপর জিয়ার সঙ্গী ভূমিদস্যুরা সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের যোগসাজশে গত ১৫ অক্টোবর ২০১৫ সালে ভোর ৬ টায় হাসপাতালটি দখল করে নেয়। পুলিশের সময়োচিত হস্তক্ষেপে ৬ জন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেফতার হয়। তাদের বিরুদ্ধে মামলার চার্জশীট আদালত কর্তৃক গৃহীত হয়েছে। ভূমিদস্যু সিন্ডিকেট এর প্রধান হোতা এনামুল হক ভূইয়া বিষয়টি নিয়ে আদালতে ৭ জন পুলিশ কর্মকর্তা সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে আদালতের নির্দেশ মত পি বি আই তদন্ত করে মামলাটি ভূয়া বলে রিপোর্ট প্রদান করেন। এত কিছুর পরও তারা থেমে থাকেনি। দফায় দফায় হাসপাতালটি দখলের পায়তারা অব্যাহত রাখে। টাকার বিনিময়ে সন্ত্রাসী ভাড়া করে কিছুদিন পর পর হাসপাতালে হামলা করে। ফলে প্রতিষ্ঠানটি বিপুল অঙ্কের টাকা লোকসানে পড়ে। বাধ্য হয়ে কর্তৃপক্ষ হাসপাতালটি বন্ধ করে বিনিয়োগকারীদের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা নিতে শুরু করলে দখলবাজরা চুড়ান্ত আঘাত হানে। অতি দ্রুত দখলকারীদের হাত থেকে হাসপাতালটি রক্ষায় পৌরসভা ও পুলিশ কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন বলে ভুক্তভোগীরা আশা প্রকাশ করছেন। একজন রডমিস্ত্রী ও দুইজন দর্জি নিজেদের কে হাসপাতালের মালিক দাবী করার বিষয়টি অবান্তর বলে কর্তৃপক্ষ জানান। তারা বলেন বিনিয়োগকারীরা পরষ্পর পরিচিত ও প্রত্যেকের টাকার হিসাব সবাই অবগত আছেন। কমিটির সিদ্ধান্ত অনুসারে সবাইকে বৈধ ফরমেট অনুসরন করে দলিল প্রদান করা হয়েছে। হারিজ মিয়া যে মিথ্যা দলিল সৃজন করেছেন তা সবাই অবগত আছেন এবং বিষয়টি আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।