খুলনা প্রতিনিধি : খুলনায় পিতাকে হত্যার দায়ে পুত্র প্রশান্ত বিশ্বাসকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একইসাথে তাকে ১০ হাজার জরিমানা, অনাদায়ে আরও ২ মাসের সশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। আসামি প্রশান্ত বিশ্বাস রূপসা উপজেলার পিঠাভোগ গ্রামের প্রফুল্ল বিশ্বাসের বড় ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিল।
সোমবার অতিরিক্ত খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত ২ এর বিচারক তাসনিম জোহরা এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালত সূত্র জানায়, নিহত প্রফুল্ল বিশ্বাস কৃষিকাজ ও ধর্মীয় গান করতেন। তার দু’ছেলে। একজন দর্জির কাজ ও অপরজন ফরিদপুর জেলায় এনজিওর কর্মী হিসেবে কাজ করেন। ছেলেদের দু’জনের কেউ বিয়ে করেনি। বড় ছেলে প্রশান্ত বিশ্বাস বিয়ের জন্য মা বাবাকে চাপ দিতে থাকে। এ নিয়ে তাদের পরিবারে প্রায়ই কলহ দেখা দিত। ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কলহ দেখা দেয়। মাকে মারতে উদ্যত হয় প্রশান্ত। পরের দিন মা পাশের গ্রামে মামার বাড়িতে চলে যায়। ১৬ জানুয়ারি রাতে নিহত প্রফুল্ল বিশ্বাস গান গাইতে অকুল পালের বাড়িতে যেয়ে রাত ১১ টায় বাড়ি ফিরে আসে।
১৭ জানুয়ারি সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালাতে গিয়ে পাশের বাড়ির সুভদ্রা বিশ্বাস প্রফুল্ল’র গলা কাটা লাশ দেখে চিৎকার করতে থাকে। তার চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে নিহতের লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয়। পরে নিহতের ছোট ছেলে সুশান্ত বিশ্বাস বাদী হয়ে বড় ভাই প্রশান্ত বিশ্বাসকে আসামি করে রূপসা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
আসামি প্রশান্ত বিশ্বাস বাবাকে হত্যা করে বেনাপোল বন্দর হয়ে ভারতে চলে যায়। পশ্চিম বশিরহাটের একটি দোকানে দর্জির কাজ শুরু করে সে। এরপর সেখান থেকে বনগাঁয়ে গিয়ে কাজ করতে থাকে। এরপর দেশে ফিরে পুলিশের নিকট আত্মসমর্পণ করে। আদালতে ঘটনার বিবরণ জানিয়ে ১৬৪ ধারায় স্বাীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় সে।
একই বছরের ১২ অক্টেবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক এ,কে, এম মাহফুজুল হক প্রশান্ত বিশ্বাসকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।