সর্বশেষ সংবাদ
Home / সারাদেশ / খুলনা বিভাগ / কুষ্টিয়ায় পেঁয়াজের বাম্পার ফলনেও হতাশ চাষিরা

কুষ্টিয়ায় পেঁয়াজের বাম্পার ফলনেও হতাশ চাষিরা

আল—আমিন খান রাব্বি, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়া জেলায় পেঁয়াজ চাষে কৃষি বিভাগ বাম্পার ফলনের আশা করলেও ২০২২—২৩ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। চলতি মৌসুমে পেঁয়াজ রোপনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ৭৩৫ হেক্টর জমি। সেখানে আবাদ করা হয়েছে ১২ হাজার ১৩১ হেক্টর। গত বছরের চেয়ে কম দামে পেঁয়াজের বীজ ক্রয়, চারার মূল্য কম, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় চাষিরা এবার ব্যাপক হারে পেঁয়াজ রোপন করছে বলে তারা জানান।

তবে চলতি মৌসুমে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি, তেলের মূল্য বেশি হওয়ায় সেচের মূল্য বৃদ্ধি এবং পেঁয়াজের মাটি প্রস্তুতে খরচ বেশি হওয়ায় চাষিরা হতাশার মধ্যে আছে। পেঁয়াজ চাষে যে পরিমান খরচ হচ্ছে তাতে লাভের চেয়ে ক্ষতির পরিমান বেশি হবে বলে মনে করছেন চাষিরা। তাই ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানী বন্ধ করার দাবি জানান তারা। তা না হলে লোকসান আরো বেড়ে যাবে।

কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় তাহেরপুরী, বারী পেঁয়াজ—১, কিংসুপার ও মেটাল এই চার জাতের পেঁয়াজ কৃষকেরা রোপন করছে। চলতি মৌসুমে পেঁয়াজ রোপনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ৭৩৫ হেক্টর জমি, সেখানে অর্জিত হয়েছে ১২ হাজার ১৩১ হেক্টর জমি। এ বছর কৃষকের প্রতি বছরের ন্যায় পেঁয়াজ রোপন না করায় এবং ভারতীয় বীজ চাষিদেরকে ক্ষতিগ্রস্থ করায় চাষিরা গত বারের মত পেঁয়াজ রোপন করেনি। কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ১ হাজার ৮২০ হেক্টর, খোকসা উপজেলায় ২ হাজার ৫৭৬ হেক্টর, কুমারখালী উপজেলায় ৪ হাজার ৩৬৯ হেক্টর, মিরপুর উপজেলায় ৩১২ হেক্টর, ভেড়ামারা উপজেলায় ২৩৫ হেক্টর ও দৌলতপুর উপজেলায় ২ হাজার ৮১৯ হেক্টর। তবে কৃষকরা জানায় কৃষি অফিসের দেয়া তথ্যের চেয়ে মাঠ পয্যায় কৃষকের পেঁয়াজ বেশি রোপন হয়েছে।

অন্যদিকে চাষিরা দলবদ্ধভাবে শ্রমিক নিয়ে পেঁয়াজ তোলা কাজ করছেন। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পেঁয়াজের বীজ গেল বছর খোলা বাজারে ৬ থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হলেও এ বছর তা কমে বিক্রি হয়েছে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকায়।পেঁয়াজের চারা গত বছর ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায় কেজি বিক্রি হলেও এবার বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। বীজ, চারা, সার, পরিচর্যাসহ এবার বিঘাপ্রতি পেঁয়াজ উৎপাদনে চাষিদের খরচ হবে ২৮ থেকে ৩২ হাজার টাকা। এ বছর বিদেশি কিংসুপার জাতীয় চারা রোপণ করা য়েছে। এতে বিঘায় ৪৫ থেকে ৬০ মণ পেঁয়াজ উৎপন্ন হবে। যার বাজার মূল্য হবে ৪০ থেকে প্রায় ৮০ হাজার টাকা।

কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের চাষি মিজানুর বলেন, পেঁয়াজ চাষে খরচ কমেছে। এবার বিঘাপ্রতি খরচ হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। দেড় বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চারা রোপণ করেছিলাম। নিয়মিত পরিচর্যা করেছি। আশা করছি ফলন ভালো হবে। তবে ভারতীয় বীজ ক্রয়করে ধরা খেয়েছি। পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে।
কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলেন, পেঁয়াজ চাষিদের অর্থকারী ফসলের মধ্যে অন্যতম। এ অঞ্চলের মাটি পেঁয়াজ চাষে উপযোগী। উপজেলার কৃষি কর্মকর্তারা সব সময় কৃষকদের পেঁয়াজ চাষে পরামর্শ দিয়ে আসছে।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

জামালপুরে আন্তর্জাতিক নদী দিবস২০২৪ পালিত

সদর প্রতিনিধি জামালপুর: অদ্য ৫ অক্টোবর ২৪ জামালপুরে আন্তর্জাতিক নদী দিবস ২০২৪ ...