কাশ্মীরিদের চিকিৎসাসেবা দিতে নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করার পরিকল্পনা করছে পাকিস্তানি ডাক্তারদের একটি দল। সোমবার ভারত সরকারের অনুমতি নিয়ে সীমান্ত পেরোনোর কথা রয়েছে তাদের। ডাক্তার, নার্স ও প্যারামেডিকদের নিয়ে গঠিত এ দলের সদস্য ৭৫ জন।
রোববার দলটি আজাদ কাশ্মীরের মুজাফফারাবাদ পৌঁছেছে। তবে ভারত সরকারের অনুমতি মিলবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে বলে জানিয়েছে দ্য ইন্টারন্যাশনাল।
গত ৩০ আগস্ট লাহোরের ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্স (ইউএইচএস) এবং পাকিস্তান সোসাইটি অব ইন্টারনাল মেডিসিন (পিএসআইএম) স্বাক্ষরিত এক চুক্তি অনুসারে কাশ্মীরিদের চিকিৎসাসেবা দিতে যাচ্ছে এ দলটি। ডাক্তারদের এ দলটির সঙ্গে পর্যাপ্ত ওষুধও থাকবে বলে জানিয়েছে দৈনিক ডন।
গত ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নেয় ভারত সরকার। আরোপ করা হয় চলাচলের বিধিনিষেধ। কারারুদ্ধ রাখা হয় কাশ্মীরের নেতাদের। বন্ধ করা হয় মোবাইল, ইন্টারনেট ও ল্যান্ডলাইন সেবা। ফলে অঞ্চলটির চিকিৎসাসেবা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। হাসপাতালগুলোতে ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে। দীর্ঘ ৩৬ দিন ধরে চলাচলে কড়াকড়ি থাকায় ডাক্তার এবং নার্সরা হাসপাতালে যেতে সমস্যায় পড়েছে।
রাজধানী শ্রীনগরের প্রধান হাসপাতালের ডাক্তারদের জরুরি অপারেশন থিয়েটারে পাঠানো হলে অবশিষ্ট ডাক্তার দিয়ে প্রাত্যহিক সার্জারির কাজে বিলম্ব হচ্ছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হলেও প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে অনেক রোগীকে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। শ্রীনগরের প্রায় ৩ হাজার ওষুধ বিতরণ কেন্দ্র রয়েছে। কিন্তু কড়াকড়ির মধ্যে হাসপাতালগুলোতে ওষুধ পাঠানো সম্ভব হয়নি।
কাশ্মীরের এ সংকটময় পরিস্থিতিতে সেখানকার বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়াতে চান পাকিস্তানি ডাক্তাররা। কাশ্মীর প্রবেশে ভারত যাতে বাধা না দেয় সেজন্য বিজেপি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইউএইচএসের ভাইস চ্যান্সেলর জাভেদ আকরাম। ডাক্তারদের ওই দলে তিনিও রয়েছেন।
জাভেদ বলেন, ‘মুজাফফারাবাদে জাতিসংঘ প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকের পর আমরা জম্মু-কাশ্মীরে প্রবেশের জন্য লাইন অব কন্ট্রোল (নিয়ন্ত্রণ রেখা) অতিক্রম করব।’
ভারত সরকার তাদের প্রবেশের অনুমতি দেবে কিনা তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন তিনি। ভারত বাধা দিলেও মানবিক প্রয়োজনে তাদের অন্তত তিনজন ডাক্তারকে যেন অনুমতি দেয় সেই আহ্বান জানিয়েছেন জাভেদ।
এদিকে, ৩৬ দিন অবরুদ্ধ থাকার পর কাশ্মীরের অধিকাংশ স্থানে দিনের কড়াকড়ি প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে নিরাপত্তা বাহিনী ও শিয়া মুসলমানদের মধ্যে সংঘর্ষের পর শ্রীনগরের বেশিরভাগ এলাকায় পুনরায় কারফিউ জারি করেছে ভারত।
শনিবার সন্ধ্যায় রেইনাওয়ারি ও বাদগ্রামে ওই সংঘর্ষে অন্তত ১২ বেসামরিক নাগরিক এবং ছয় সেনা সদস্য আহত হয়েছেন। এরপরই রোববার সকালে পুলিশ ভ্যান থেকে লাউড স্পিকারে নগরীর লাল চক ও আশপাশের এলাকায় কারফিউ জারির ঘোষণা দেয়া হয়।