সর্বশেষ সংবাদ
Home / জাতীয় / এ কে খন্দকারের ক্ষমা প্রার্থনা, স্ত্রীর গুরুতর অভিযোগ

এ কে খন্দকারের ক্ষমা প্রার্থনা, স্ত্রীর গুরুতর অভিযোগ

বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণ শেষে ‘জয় পাকিস্তান’ বলে শেষ করেন- এমন উদ্ভট তথ্য লেখায় জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন মুক্তিযুদ্ধের উপপ্রধান সেনাপতি এ কে খন্দকার। বইটি প্রকাশের প্রায় পাঁচ বছর পর প্রকাশ্যে এসে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এই দুঃখ প্রকাশ করলেন।

যে সংবাদ সম্মেলনে এ কে খন্দকার এই ক্ষমা চান, সেখানে তার স্ত্রী ফরিদা খন্দকার তুলেছেন গুরুতর অভিযোগ। তার দাবি এই ভুল সংশোধনের চেষ্টা করেও তারা তা পারেননি কয়েকজন মানুষের কারণে।

আজ শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন করেন এ কে খন্দকার।
২০১৪ সালের আগস্টে মুক্তিবাহিনীর উপ অধিনায়কের ‘১৯৭১ ভেতরে বাইরে’ বইটি তুমুল বিতর্ক তৈরি করে। প্রকাশনা সংস্থা প্রথমার আনা এই বইটিতে মুক্তিযুদ্ধের আগে ও যুদ্ধ চলাকালীন নানা ঘটনা তুলে ধরেন খন্দকার, যিনি ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে মুক্তিবাহিনীর প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

এই বইটি প্রকাশের পর এ কে খন্দকার বিতর্কিত অংশটুকুর কোনো ব্যাখ্যা দেননি, যিনি দাবি করেন, ৭ মার্চের ভাষণে ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ বলার পর বঙ্গবন্ধু ‘জয় বাংলা’র শেষে ‘জয় পাকিস্তান’ও বলেছিলেন।

বিএনপির শাসনামলে ৯০-এর দশকে একবার এই বিষয়টি সামনে আনার চেষ্টা হয়েছিল। তবে লাখো মানুষের সামনে দেওয়া ভাষণে যেটা বঙ্গবন্ধু উচ্চারণ করেননি, সেটা বলেছেন বলে প্রমাণের চেষ্টা হালে পানি পায়নি। মুক্তিযুদ্ধের উপ-অধিনায়ক হলেও এ কে খন্দকারের এই বক্তব্যও গুরুত্ব পায়নি। উল্টো তাকে ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয় তাকে।

পাঁচ বছর পর ব্যাখ্যায় এ কে খন্দকার বলেন, “আমার লেখা বই ‘১৯৭১ ভেতরে বাইরে’ ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে ‘প্রথমা প্রকাশনী’ থেকে প্রকাশিত হয়। বইটির ৩২ নম্বর পৃষ্ঠায় উল্লেখিত বিশেষ অংশ ও বইয়ের আরও কিছু অংশের প্রতি সারাদেশে প্রতিবাদ উঠে। সেখানে লেখা ছিল, বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণেই যে মুক্তিযুদ্ধ আরম্ভ হয়েছিল তা আমি মনে করি না। এই ভাষণের শেষ শব্দগুলো ছিল জয় বাংলা, জয় পাকিস্তান। তিনি যুদ্ধের ডাক দিয়ে বললেন ‘জয় পাকিস্তান’!…….।”

‘এই অংশটুকুর জন্য দেশপ্রেমিক অনেকেই কষ্ট পেয়েছেন বলে আমি বিশ্বাস করি। এই তথ্যটুকু যেভাবেই আমার বইতে আসুক না কেন, এই অসত্য তথ্যের দায়ভার আমার এবং বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণে কখনও ‘জয় পাকিস্তান’ শব্দ দুটি বলেননি। তাই আমার বইয়ের ৩২ নম্বর পৃষ্ঠার উল্লেখিত বিশেষ অংশ সম্বলিত পুরো অনুচ্ছেদটুকু প্রত্যাহার করে নিচ্ছি এবং একই সঙ্গে জাতির কাছে ও বঙ্গবন্ধুর বিদেহী আত্মার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।’

এই ভুলটি বয়সের কারণে হয়েছে উল্লেখ করে মুক্তিবাহিনীর উপ প্রধান সেনাপতি বলেন, ‘আমার বয়স এখন ৯০ বছর। আমার সমগ্র জীবনে করা কোনও ভুলের মধ্যে এটিকে আমি একটি বড় ভুল বলে মনে করি। গোধূলি বেলায় দাঁড়িয়ে পড়া সূর্যের মতো আমি আজ বিবেকের তাড়নায় দহন হয়ে বঙ্গবন্ধুর আত্মার কাছে ও জাতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আমাকে ক্ষমা করে দেবেন। আশা করি প্রথমা প্রকাশনী আমার বইয়ের ৩২ পৃষ্ঠার বিতর্কিত অংশটুকু বাদ দিয়ে পুনর্মুদ্রণ করবে।’

পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কে খন্দকারের স্ত্রী মইদুল হাসান ও জাফর উল্লাহ নামের দু্ই ব্যক্তির কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘তারা বেশ কিছুদিন পাহারা দিয়ে রেখেছিল যেন সংশোধন করতে না পারি। মইদুল হাসান বলেছিল, ‘গুলি তো ছেড়ে দিয়েছো, এখন কি গুলির পিছে দৌড়াবা’।”

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ আজ : আলোচনায় সংস্কার ও নির্বাচনি রোডম্যাপ

  সদরুল আইন: অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের ...