ডেস্ক রিপোর্ট: জাতীয় নির্বাচনের খুব বেশি বাকি নেই। অক্টোবরে তফসিল। ডিসেম্বরের মধ্যেই ভোট হবে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারাই জানিয়েছে এসব তথ্য।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দেশের বড় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি চলছে। সর্বশেষ গত ২৩ জুন গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘ বক্তৃতা তারই ইঙ্গিত দিয়েছে।
তিনি স্পষ্টই বলে দিয়েছেন, জনপ্রিয় ও জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিরাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন। টাকা নিয়ে যারা এলাকায় কাজ করেন, দুর্নীতি করেন তারা মনোনয়ন পাবেন না। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই বক্তৃতা কার্যত মনোনয়ন-সংকেত। কারা মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন, এ থেকেই সহজে অনুমেয়।
সভায় স্বাগত ভাষণে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও দলের অবস্থান স্পষ্ট করেন। তিনি বলেন, কে বড় নেতা, কে ছোট নেতা তা দেখা হবে না। জনগণের কাছে যাদের গ্রহণযোগ্যতা বেশি থাকবে, তারাই দলীয় মনোনয়ন পাবেন। নির্বাচন সামনে রেখে তৃণমূল থেকে জরিপের প্রতিবেদন আওয়ামী লীগের সভাপতির হাতে পৌঁছেছে বলেও জানান তিনি।
আগামী সংসদ নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জিং বলে আখ্যায়িত করেন শেখ হাসিনা। বলেছেন, ‘নির্বাচন মানেই সেটা চ্যালেঞ্জিং হবে এবং এই নির্বাচনে সকলকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।’
আওয়ামী লীগ সরকার গত সাড়ে নয় বছরে দেশের উন্নয়নে কী কী কাজ করেছে, তা তুলে ধরার জন্য আওয়ামী লীগের সভাপতি তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি ও দলের নেতাদের প্রতি অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা যে কাজগুলো করেছি সেই কথাগুলো জনগণের কাছে আপনাদের পৌঁছে দিতে হবে। আমাদের দলের পক্ষ থেকেই এই কথাগুলো মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে যে, আমরা আপনাদের জন্য এই কাজ করছি এবং এই কাজগুলো আগামীতে করব।’
দলে কোথাও কারও কোন্দল থাকলে, তা শিগগির মিটিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা। সবাইকে এক হয়ে দলের পক্ষ কাজ করতে বলেন। জোটবদ্ধ নির্বাচনের ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, যাকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হবে সবাইকে তার পক্ষে কাজ করতে হবে। দলের দুঃসময়ে ভ‚মিকা রাখা নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করার নির্দেশনাও দেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সভাপতির দিকনির্দেশনামূলক বক্তৃতার পর সারা দেশেই মনোনয়নের সমীকরণ শুরু হয়ে গেছে। এলাকায় জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্যরা আগের চেয়ে অনেক বেশি সময় মাঠে থাকছেন। অন্যদিকে যারা দুর্নীতি ও অনিয়মে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন, তারাও সক্রিয় হচ্ছেন। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যেও বেড়েছে নির্বাচনী তৎপরতা। কারণ নির্বাচনের খুব বেশি সময় বাকি নেই। কার ভাগ্যে মিলবে দলের সবুজ সংকেত, তা দেখার জন্যই অপেক্ষায় আছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। তবে নির্বাচনী এলাকার মানুষের কাছে প্রিয় ও গ্রহণযোগ্যরা যে এগিয়ে আছেন, তা বলা যায় সহজেই।
বিশেষ বর্ধিত সভায় যা বলেছেন শেখ হাসিনা
দলের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর ওই বিশেষ বর্ধিত সভায় নেতাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সভাপতি তার দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্যে একাদশ জাতীয় নির্বাচনেও জয়ী হওয়ার প্রতি গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচন আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ত্যাগের মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে, যেন এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আবার জয়লাভ করে সরকার গঠন করতে পারে।’
দলীয় সভাপতির বক্তব্যের পর আট সাংগঠনিক জেলার পক্ষ থেকে একজন করে কথা বলেন। এতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ ও জাতীয় কমিটির সদস্য, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, দেশের বিভিন্ন মহানগরের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সারা দেশের জেলা ও উপজেলা, পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।
নেতাদের উদ্দেশে ২৩ জুন শেখ হাসিনা বলেন, ‘সারা দেশে আমরা যে উন্নয়ন করছি সে কথা বলতে হবে। হ্যাঁ, প্রার্থী হতে পারে, যে কারো প্রার্থী হওয়ার অধিকার আছে। কিন্তু সেই প্রার্থী হতে গিয়ে আমার দলকে বদনামে ফেলবে, আমি কিন্তু এটা কোনোভাবেই মেনে নেব না। এটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে।’
দল ভারী করতে যারা অন্য রাজনৈতিক শক্তি থেকে নেতা-কর্মী আনেন বর্ধিত সভার ভাষণে তাদের সাবধান করে দেন শেখ হাসিনা। বিভিন্ন দল থেকে এমন যারা দলে এসেছে তাদের তালিকা রয়েছে জানিয়ে তাদের দ্রুত বিদায় দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বর্ধিত সভার ভাষণে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা আমাদের দলের বিরুদ্ধে কথা বলবে, বদনাম করবে তারা কি বোঝেন না এতে তাদেরও ভোট কমছে? পাঁচ বছর-পাঁচ বছর দশ বছর ক্ষমতায় থাকার পরও যদি দলের বিরুদ্ধে বদনাম করে জনগণ তো তাকেও ভোট দেবে না। তিনি কোন মুখে ভোট চাইতে যাবেন?’
জনপ্রিয়রাই পাবেন মনোনয়ন
বিশেষ বর্ধিত সভার ভাষণে বর্তমান সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা কথা মাথায় রাখবেন- আপনাদের বলব জনগণ কিন্তু খুব হিসেবি। কেউ দুর্নীতি করলে জনগণ কিন্তু তা মনে রাখে। কেউ কিন্তু ভুলে যায় না। ওই কাজ করতে গিয়ে টাকা নিলে, তারপর ভোট চাইতে গেলে বলবে, টাকা দিয়ে কাজ করেছি ভোট দিব কেন?’
আওয়ামী লীগ সভাপতি আরো বলেন, ‘জনগণের কিন্তু চোখ খুলে গেছে। এখন ডিজিটাল যুগ। তারা সবকিছু জানতে পারে। যারা এমপি আছেন তারা নমিনেশন পাবেন কি পাবেন না তা নির্ভর করছে এলাকায় কে কতটুকু জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পেরেছেন, আর কতটুকু আমাদের নেতা-কর্মীকে মূল্যায়ন করেছেন, সেটাও কিন্তু আমি বিবেচনা করব।’
আওয়ামী লীগ যেহেতু ক্ষমতায় তাই বিভিন্ন দল থেকে অনেকেই ছুটে আসবে। এরা মধু খেতে আসে মন্তব্য করে এমন কারা কারা দলে এসেছে তার তালিকা রয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। এদের প্রশ্রয় দিয়ে থাকলে দ্রুত বিদায় দেওয়ারও নির্দেশ দেন তিনি।
শেখ হাসিনার ভাষ্য, ‘আমি একটা সার্ভে করে দেখেছি, যেহেতু আমরা ক্ষমতায় বিভিন্ন দল থেকে অনেকেই ছুটে আসবে দলে। গ্রুপ করার জন্য কোনো বাছবিচার নাই যাকে পাচ্ছে তাকে নিয়ে নিজের শক্তি দেখাতে চায়। এরা আসে মধু খেতে। যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তারা ভাবে এখানে (আওয়ামী লীগ) এলে মামলা থেকে বাঁচতে পারবে। ক্ষমতার সঙ্গে থাকলেই তো পয়সা বানাতে পারবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘সারা দেশে সার্ভে (জরিপ) করেছি কাদের কাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, আর তাদের কারা কারা আমাদের দলে এসেছে। সেই তালিকা কিন্তু আমার কাছে আছে। তাই বলব যদি কেউ তাদের প্রশ্রয় দিয়ে থাকেন, তাহলে এখনই তাদের বিদায় করেন। কারণ তারা তাদের দুঃসময়ে থাকবে। বরং বলব, অনেকেই আসবে। তারা এসেই আপনাদের মধ্যে কোন্দল করে খুন করবে, পরে নাম হবে দলের মানুষ দলের মানুষকে খুন করেছে।’
এসব বিষয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের যথেষ্ট সজাগ থাকতে হবে, সহনশীল হতে হবে বলে নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা মনে করবেন না যে, দলের লোক আপন না, ওই বাইরের লোক আপন হয়ে গেছে। এটা মাথায় রেখেই আপনাদের চলতে হবে।’
বলতে হবে উন্নয়নের কথা
আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা জনগণের কাছে প্রচার করতেও নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আপনাদের কাছে আমি বিশেষভাবে এইটুকু চাইব, যেসব কাজ আমরা করেছি, সে কথাগুলো আপনাদের জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। আমরা বিভিন্ন রকমের স্লোগান দিচ্ছি। কিন্তু সেগুলো জনগণের কাছে দলের পক্ষ থেকে পৌঁছে দিতে হবে। আমাদের বলতে হবে যে, আমরা এই কাজ করছি, এই কাজ করব।’
আওয়ামী লীগ যে কথা দেয় সে কথা রাখে উলেøখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে যে ইশতেহার দিয়েছিলাম, সেখান থেকে অনেক দূর আমরা এগিয়ে নিয়ে গেছি। আবার ২০১৪ সালের নির্বাচনি ইশতেহার থেকেও আমরা এগিয়ে গিয়েছি। পরের বারে আমরা আরো অগ্রগতি করতে সক্ষম হব। কাজেই আওয়ামী লীগ যে কথা দেয়, সে কথা রাখে। সে কথাটাই মনে রাখতে হবে। আর জনগণকে সে কথা বলতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রীর ভাষ্যমতে, ‘সামনে আমাদের নির্বাচন। আমাদের মাথায় রাখতে হবে এই নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হবে। এতে কিন্তু সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।’
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কেউ কেউ নিজ থেকে প্রার্থী হয়ে গেছেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমি একটা জিনিস লক্ষ করেছি, ইতিমধ্যে দেখা যায় কেউ কেউ স্বপ্রণোদিত হয়ে প্রার্থী হয়ে গেছেন। আর প্রার্থী হয়ে তারা বক্তব্যে বিএনপি যে লুট করেছে সেসব কথা বলছে না। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ বিএনপি সৃষ্টি করেছে সে কথাও বলছে না। তাদের বক্তব্যে এসে যায় আওয়ামী লীগের এমপির বিরুদ্ধে, সংগঠনের বিরুদ্ধে।’
তিনি আরো বলেন, ‘পরিষ্কার কথা। ডিজিটাল বাংলাদেশ। আজকাল সব কথাই রেকর্ড হয়। চাইলে মোবাইল মারফত সেগুলো শুনতে পারি। আমি মোবাইল ধরি না কিন্তু দিনে ৪০০-৫০০ ম্যাসেজ (এসএমএস) আসে। যখনই সময় পাই তখনই এগুলো পড়ি। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করি।’
‘সুসময়ে অনেকে বন্ধু বটে হয়, দুঃসময়ে হায় হায় কেউ কারো নয়’ কবিতার চরণ দুটি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ওপর অনেক ঝড়ঝাপটা গেছে। একটা জিনিস খেয়াল করতে হবে, দুঃসময়ের কর্মীরা যাতে অবহেলিত না হয়।’ ‘কি পেলাম আর কি পেলাম না’ এমন মনোভাবের পরিবর্তে আগামীতে ‘কি দিতে পারবো’ এমন ত্যাগের মনোভাব নিয়ে নেতা-কর্মীদের কাজ করার পরামর্শ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
জোটবদ্ধ নির্বাচনের ইঙ্গিত
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জোট করেছি, মহাজোট করেছি। নির্বাচনের স্বার্থে জোট করতে হয়। আমরাও করব, আমরা বন্ধু হারাব না। সবাইকে নিয়েই জোট করতে চাই।’ তবে এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের দায়িত্বটা অনেক বেশি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এ দেশের সব থেকে বড় দল, তার জনসমর্থন সব থেকে বেশি সেটা মাথায় রেখেই যাকে আমরা নৌকা মার্কা দেব, যাকে আমরা নির্বাচনে প্রার্থী করব তার পক্ষে সকলকে কাজ করতে হবে।’
কে প্রার্থী হলো সেটা বড় কথা নয় উলেøখ করে তিনি বলেন, ‘আপনাদের এখন থেকেই জনগণের কাছে যেতে হবে নৌকা মার্কায় ভোট চাওয়ার জন্য। নৌকাই এ দেশের মানুষকে বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার, স্বাধীনতা এবং ভোট ও ভাতের অধিকার দিয়েছে।’
বড় নেতা, ছোট নেতা বিবেচনা করা হবে না: কাদের
গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নে বড় নেতা, ছোট নেতা নয়, জনপ্রিয়তা দেখা হবে। তার ভাষ্য, ‘জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে যেসব নেতার, জনগণের কাছে যাদের গ্রহণযোগ্যতা বেশি থাকবে তারাই দলীয় মনোনয়ন পাবেন। কে বড় নেতা, কে ছোট নেতা সেসব বিবেচনা করা হবে না।’
ক্ষমতাসীন দলটির সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তৃণমূল থেকে জরিপের রিপোর্ট আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর হাতে পৌঁছেছে।’ তার বক্তব্য অনুযায়ী, ‘তৃণমূলে যেসব নেতার জনপ্রিয়তা আছে, যারা সাধারণ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য, তাদেরই মনোনয়ন দেওয়া হবে। যারা বড় নেতা হয়েও এলাকায় জনবিচ্ছিন্ন তাদের মনোনয়ন দেওয়া হবে না।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘দলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলে এলাকায় যেসব নেতা কাজ করেছেন, উন্নয়নে ভ‚মিকা রেখেছেন, তারাই মনোনয়নের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবেন।’